হাসির আড়ালে কাল নাগিনী
আরিফ ছিলো সবার চোখে একেবারে সরল-ভদ্র ছেলে। ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করত। অফিসের সহকর্মীদের সাথে তার খুব বেশি মিশেমিশি ছিল না। কিন্তু একদিন হঠাৎই রুমানা নামের এক সহকর্মী তাকে আলাপ জুড়ে দিল।
রুমানা ছিল সবসময় প্রাণখোলা হাসির মেয়ে। অফিসে ঢুকলেই তার হাসির শব্দে যেন চারপাশ ভরে যেত। যে কেউ তাকিয়ে মনে করতো—“আহা! কী নিষ্পাপ, কী মিষ্টি মেয়ে!”
কয়েকদিনের মধ্যেই রুমানা আরিফের সাথে খুব বেশি ফ্রেন্ডলি হয়ে গেল। টিফিন টাইমে একসাথে খাওয়া, অফিস শেষে আড্ডা—ধীরে ধীরে আরিফ তার প্রেমে পড়ে গেল। সে ভাবলো—“জীবনে এর চেয়ে ভালো মেয়ে আর পাবো না।”
কিন্তু গল্পটা অন্যদিকে মোড় নিল।
একদিন অফিসে আরিফ জানতে পারলো, রুমানা আসলে একাধিক সহকর্মীর সাথে একইভাবে হাসিখুশি ব্যবহার করছে। শুধু তাই নয়, সে নাকি বিভিন্ন ছেলেদের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়, উপহার নেয়, এমনকি তাদের কাছ থেকে ব্যয়বহুল জিনিসও হাতিয়ে নেয়।
আরিফ অবাক হয়ে সরাসরি রুমানার কাছে জানতে চাইলো।
রুমানা তখনও হেসে বলল—
– “আরে আরিফ ভাই, এত সিরিয়াস কেন? হাসিখুশি থাকা কি অপরাধ? আমি তো সবার সাথেই এমন।”
কিন্তু সময় গড়াতে গড়াতে সত্য বেরিয়ে এলো। রুমানা আসলে নিজের স্বার্থে মিষ্টি হাসি ব্যবহার করে মানুষকে ফাঁদে ফেলতো। একাধিক মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করতো, তাদেরকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতো।
সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো—সে কোনো সম্পর্ককেই সিরিয়াসলি নিত না। যেদিন কারো টাকা, উপহার বা সুবিধা নেওয়া শেষ হয়ে যেত, সেদিন তার হাসি ফিকে হয়ে যেত। নতুন শিকারের দিকে ছুটে যেত।
আরিফ ভেঙে পড়লো, কিন্তু একটা শিক্ষা পেল—
👉 হাসি সবসময় নিষ্পাপ হয় না।
👉 মায়াবী হাসির আড়ালে কখনো কখনো বিষধর সাপ লুকিয়ে থাকে।
শিক্ষণীয়
মানুষের চরিত্র তার হাসি দিয়ে বিচার করা যায় না। যাকে নিষ্পাপ ভাবি, সে হয়তো ভিতরে ভিতরে আমাদের ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করছে। তাই অন্ধভাবে কাউকে বিশ্বাস করা উচিত নয়।
