মাতাল: ভালোবাসার গল্প | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

  •  ভালোবাসার স্ট্যাটাস

ভালোবাসার স্ট্যাটাস

ডাক্তার তানিয়াকে দেখে ওর স্বামী হাসানকে বললো,


  - আপনার স্ত্রীর পেঠের বাচ্চা উল্টে গেছে। এই মুহূর্তে সিজার না করলে মা বাচ্চা দুজনকে বাচ্চানো কষ্টকর হবে.. 


  হাসান ভয়ে ভয়ে ডাক্তার কে বললো,


 -- সিজার করতে কত খরচ হবে? 


 ডাক্তার বললো,


 - সবকিছু মিলিয়ে ৩০ হাজারের মত খরচ হবে


 হাসান ডাক্তারের কথা শুনে বললো, 


  -- আপনি অপারেশন শুরু করেন আমি টাকার ব্যবস্থা করছি। 


  হাসপাতাল থেকে বের হয়ে হাসন তার মানিব্যাগটা খুলে দেখে মানিব্যাগে ৭২০ টাকার মত আছে। অথচ তার দরকার ৩০ হাজার টাকা....


  হাসানের কোলে সদ্য জন্ম নেওয়া তার মেয়ে। আর পাশে শুয়ে আছে তার স্ত্রী তানিয়া। তানিয়া হাসানের হাতটা ধরে বললো,


  - তুমি আমার জন্য তোমার মায়ের শেষ স্মৃতি গহনাগুলো বিক্রি করে দিয়েছো তাই না? 


  হাসান মুচকি হেসে তানিয়ার কপালে চুমু দিয়ে বললো,


  -- কে বলেছে গহনা গুলো আমার মার শেষ স্মৃতি? এই তো আমার মা আমার কোলে শুয়ে আছে...


  এই ঘটনা গুলো হলো মধ্যবিত্ত পরিবারের। মধ্যবিত্ত পারিবারের পুরুষের স্ত্রীগুলো খুব বদমেজাজি খিটখিটে হয়। কিন্তু এই বদমেজাজি স্ত্রীগুলোই সংসারটাকে মাসের ২০ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত কিভাবে টেনে নিয়ে যায় সেটা কেউ জানে না...


  মধ্যবিত্ত পরিবারের পুরুষ গুলো হয়তো স্ত্রীকে দামী শাড়ি দামী গহনা উপহার দিতে পারে না। কিন্তু কেউ যদি তার স্ত্রীকে অপমান করে সেটা সহ্য করতে পারে না... 


 পকেটে ১০০ টাকাও নেই অথচ স্ত্রী আর সন্তানের জন্য নিজের সর্বোচ্চ ত্যাগ করার পরিবারটার নাম হলো মধ্যবিত্ত...


 দিন শেষে বেঁচে থাকুক প্রতিটা মধ্যবিত্ত পরিবার। বেঁচে থাকুক ওদের লুকানো ভালোবাসা গুলো..


অনুগল্প : মধ্যবিত্ত_পরিবার

  • স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা

আমার স্বামীর শার্ট ধুতে গিয়ে যেদিন প্রথম বারের মতো নেশা দ্রব্য পাই সেদিন আমি খুব কেঁদেছিলাম। কেঁদে শাশুড়ি মাকে বলেছিলাম,' মা আপনার ছেলে নেশা ধরেছে।'

আমার শাশুড়ি সেদিন আমায় সান্তনা না দিয়ে শক্ত হতে বললেন। তিনি বললেন,' এতে কান্নার কি হলো বোকা মেয়ে? কেঁদো না। শক্ত হও। পুরুষ মানুষকে কখনোই তুমি তোমার দূর্বলতা দেখাবে না।যদি সে একবার জেনে যায় তুমি তার প্রতি দূর্বল তবে সারা জীবন তোমাকে তার অধীন করে রাখবে। সে তার করা অপরাধ আরো বাড়িয়ে দিবে। ভাববে তুমি তো কোমল। তুমি তো তার প্রতি দূর্বল। সে খারাপ কাজ করলেও তুমি শক্ত প্রতিবাদ করবে না কখনোই। তাকে ছেড়ে যাবে না! '

আমি বললাম,' মা , ও যে নেশা করে আমি বুঝতে পারি। ইদানিং ওর আচরণ কেমন কর্কশ হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করে না। ধমক দিয়ে সব সময় কথা বলে। আমি শতো ভালো আচরণ করলেও সে খারাপ আচরণ করে আমার সাথে।'

মা বললেন,' এই যে বললাম, দূর্বলতা প্রকাশ করা যাবে না। তুমি শক্ত হও। তোমার তো বাচ্চা আছে। ওকে দিয়েই আমার ছেলেকে তুমি পরাজিত করতে পারবে। সুযোগটা কাজে লাগাও।'

আমি বললাম, কীভাবে কী করবো মা?

মা সব বুঝিয়ে দিলেন।

পরদিন ও যখন নেশায় বুঁদ হয়ে ঘরে ফিরলো তখন কিছু বললাম না। খেতে দিলাম সুন্দর মতো। রান্না ভালো ছিল। তবুও যা তা বলেছে। রান্না ভালো হয়নি।লবণ বেশি হয়েছে।ঝাল অনেক! আমি রাঁধতে পারি না। সে আরেকটা বিয়ে করবে।আমি অনেক ব্যাকডেটেড। এইসব হাবিজাবি।

আমি সব মুখ বুজে হজম করলাম। পরদিন সকাল বেলা যখন ওর ঘুম ভাঙলো। তখন আমি ব্যাগ গুছাতে শুরু করলাম। বাবুর হাত মুখ ধুইয়ে দিয়ে ওকে কাপড় পরালাম। আমিও হাত মুখ ধুয়ে শাড়ি পরলাম। তারপর ব্যাগপত্র নিয়ে যখন মার ঘরে যাবো তখন আমার স্বামী বললো,' কোথায় যাও?'

আমি বললাম,' বাবার বাড়ি।'

ও বললো,' আমার কাছে অনুমতি না নিয়ে কেন যাচ্ছো? জরুরী নাকি?'

আমি বললাম,' হ্যা জরুরি। এই যে যাচ্ছি এটাই শেষ যাওয়া।আর ফিরবো না। আমি তোমাকে ডিভোর্স দিবো।সময় হলেই পেপার পাবে। নতুন বিয়ে করে সংসার শুরু করো।আগাম শুভ কামনা তোমার নতুন সংসারের জন্য।'

বলে মার ঘরে গেলাম।মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম আমার গন্তব্যে।

ওখানে গিয়ে নতুন সিম নিলাম। এই সিমের নম্বর শুধু মাকেই দিলাম। আগের সিম বন্ধ করে দিলাম।

তিনদিন পর মা আমায় ফোন করলেন। বললেন,' বেচারার তো অবস্থা কাহিল! তোমাদের বাড়ি থেকে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছে।ও ভেবেছে তুমি বাবার বাড়িই গিয়েছো। আমিও ইচ্ছে মতো বকেছি। রান্না বান্না কিছুই হচ্ছে না বাড়িতে। খাচ্ছি তোমার চাচা শশুরের ঘরে। ওকে বলেছি আমার ঘরে না উঠতে।ভাত সবজি না খেয়ে গাঁ*জা পাতা খেয়ে থাকতে।বলেছি এরকম কুলাঙ্গার সন্তানের আমার প্রয়োজন নাই।'

আমার সত্যি সত্যি ওর জন্য খারাপ লাগছে।ও হঠাৎ নেশা ধরেছে। আগে এরকম ছিল না। এই মানুষটির প্রতি আমার অসম্ভব রকম মায়া আছে। সে লোক ভালো।তার মন নরম। কিন্তু কেন যে এই বাজে পথে পা বাড়ালো!

আমি মাকে বললাম,' মা, আমি কি এসে পড়বো?'

মা বললেন,' উঁহু। আরো কদিন যাক।ওর শিক্ষা হোক।'

এর আরো সপ্তাহ খানিক পর মা আবার ফোন করলেন। বললেন,' ওর অবস্থা কাহিল।ছেলের জন্য পাগল হয়ে গেছে। তোমাকে মিস্ করছে। গতরাতে কেঁদেছে। সে অসহায়ের মতো বলতেছে, মা কলি আমার ছেলেরে নিয়ে কই চলে গেল? না জানি কী খাচ্ছে না খাচ্ছে! কই থাকছে না থাকছে!

আমি বলেছি, কখনো ছেলের খোঁজ নিস তুই? বউয়ের খোঁজ খবর নিস? চলে গেছে ভালো হয়সে। তুই নাকি বিয়ে করবি তাইলে কর।সেও বিয়ে করুক।সবাই সুখে থাকুক।'

আমি বললাম,' তারপর সে কি বললো?'

মা হাসলেন। বললেন,' তখনই তো কেঁদেছে। বাচ্চাদের মতো কেঁদেছে।ও তোমায় আসলে ভালোবাসে মা।আমি বলেছি, এইসব নোংরা অভ্যাস ছাড়ালে আমি তোমার খুঁজ করবো। নয়তো কখনোই না।'

আমি বললাম,' তারপর কি বললো?'

মা বললেন,' সে বলেছে ছেড়ে দিবে। কিন্তু মুখের কথা তো আর বিশ্বাস করা যায় না।আমি আরো কদিন দেখবো।'

মা আরো কদিন দেখলেন। পনেরো দিনের মতো। ততোদিনে আমার মন কেমন অস্থির হয়ে উঠেছে তার জন্য। ইচ্ছে করছে আমার পুরনো সিমটা অন করি।ওর সঙ্গে একটু যোগাযোগ করি।ছেলেও বাবাকে খুঁজে। বাবার সঙ্গে কথা বলতে চায়।বার বার বলে, কবে বাড়ি ফিরবো!

মা পনেরো দিন পর ফোন করে বললেন,' আজ ও আসবে। তোমায় নিতে আসবে।আমি বলেছি তুমি তার মেজো খালার বাসায় আছো!'

আমার স্বামী এলো সন্ধ্যা বেলায়।এসেই ছুঁ মেরে বাবুকে কোলে তুলে নিলো। তারপর আমায় বললো,' চলো বাড়ি যাই।'

আমি বিরক্তির গলায় বললাম,' তোমার না নতুন বিয়ে করার কথা? তো আমায় নিতে এসেছো কেন?'

সে আহত গলায় বললো,' তখন তো মাতাল ছিলাম।কি বলেছি না বলেছি নিজেই জানি না!'

আমি হাসলাম। বললাম,' আর এখন? এখন কি তবে?'

সে লাজুক হাসি হেসে আমার হাত ধরে আস্তে করে বললো,' এখনও মাতাল। তোমাদের মা ছেলের ভালোবাসায়।'

'

'

মাতাল

মজার সেরা গল্পের সমাহার।