ঘোড়ার ডিম পাড়া | ঘোড়া যখন ডিম পাড়া শুরু করে দেয়

 ঘোড়ার ডিমের রহস্য

ঘোড়ার ডিম

বাংলাদেশের এক গ্রামে হঠাৎ একদিন খবর ছড়িয়ে পড়লো—

“গফুর মিয়ার ঘোড়া নাকি ডিম পেড়েছে!”

এই খবর প্রথমে গ্রামের চায়ের দোকানে বসা পাঁচজন শুনলো।

তারপর সেটা এমনভাবে ছড়ালো যেন ডিমটা সোনার, আর পুরো গ্রাম সেটা দেখতে না পারলে জীবনের মানেই শেষ।

শুরুটা কেমন হলো

গফুর মিয়া আসলে ঘোড়ার খুব যত্ন নিতেন।

সেদিন তিনি বাজার থেকে বড়সড় কুমড়ো কিনে ঘোড়ার খাওয়ার জায়গায় রেখে গেলেন।

ঠিক সেই সময় পাশের বাড়ির রহিম কাকা সেটা দেখে চমকে উঠলেন—

"আহারে আল্লাহ! এত্ত বড় ডিম! এই ডিম তো হাঁস-মুরগি দিতে পারবে না, মনে হয় ঘোড়ারই!"

তিনি সঙ্গে সঙ্গে চায়ের দোকানে দৌড়ে গিয়ে বললেন—

"গফুরের ঘোড়া ডিম পাড়ছে! আমি নিজের চোখে দেখছি!"

গুজবের আগুন

চায়ের দোকানের মালিক হাসান ভাই একটুও দেরি না করে আরও রঙ চড়ালেন—

"শুধু ডিম পাড়া না ভাই, শুনেছি এই ডিমে নাকি ছানা ফুটলে সোনার খুর হবে!"

দশ মিনিটের মধ্যে পুরো গ্রামে হইচই পড়ে গেল।

স্কুলের ছেলেরা পড়া বাদ দিয়ে গফুর মিয়ার বাড়ির সামনে ভিড় জমালো।

কেউ বলছে, "এই ডিম দিয়ে নাকি একশো মানুষ পেট ভরিয়ে খেতে পারবে।"

আর কেউ বলছে, "না ভাই, এটা নাকি সরকার কিনে নিয়ে যাবে গবেষণার জন্য!"

গফুর মিয়ার অবস্থা

গফুর মিয়া তো অবাক হয়ে গেলেন—

ঘোড়ার খাওয়ার জায়গায় রাখা কুমড়ো কিভাবে ডিম হয়ে গেল?

তিনি সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন—

"এটা ডিম না ভাই, কুমড়ো!"

কিন্তু কেউ বিশ্বাস করলো না।

বরং সবাই বললো,

"গফুর ভাই, আপনার ঘোড়া দেশকে গর্বিত করছে, আর আপনি সেটা লুকাচ্ছেন!"

শেষের নাটক

হাজারো মানুষের চাপ সামলাতে না পেরে গফুর মিয়া সেই কুমড়ো নিয়ে সবাইকে দেখানোর জন্য উঠোনে আনলেন।

তারপর নিজেই কেটে ফেললেন কুমড়োটা, ভেতর থেকে বের হলো শুধু শাঁস আর বীজ।

সবাই হা করে তাকিয়ে রইলো—

কারণ “ঘোড়ার ডিম” এর স্বপ্ন সেখানেই ফুসসে গেল।

শিক্ষা

এই ঘটনা দেখে গ্রামের স্কুল মাস্টার বললেন—

"দেখো, মানুষের মুখে যা শোনা যায়, সেটা সবসময় সত্যি হয় না।

কেউ যদি বলে ঘোড়া ডিম পাড়ে—প্রথমে যাচাই করো, নাহলে হাসির পাত্র হয়ে যাবে।

গুজব যত দ্রুত ছড়ায়, সত্যি তার চেয়ে অনেক ধীরে আসে—কিন্তু শেষে সত্যিই জেতে।"