নিজের পথে ভরসা
রাজীব নামের এক তরুণ গ্রামে জন্মেছে। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করবে, নিজের শক্তি আর পরিশ্রমে জীবন গড়বে। কিন্তু রাজীবের চারপাশে অনেকেই ছিল যারা সবসময় অন্যের সাহায্যের উপর নির্ভর করতো। কেউ জমি লিজ নিতে গিয়ে অন্যের পেছনে দৌড়ায়, কেউ আবার ব্যবসা করার আগে শক্তিশালী আত্মীয়ের সাহায্যের আশায় বসে থাকে।
রাজীব ভিন্ন ছিল। সে জানত, যতক্ষণ তার শরীরে শক্তি আছে, তাকে নিজের মতো দৌড়াতে হবে। তাই কলেজে পড়ার সময়ই সে একা একা টিউশনি করে খরচ চালাতে শুরু করল। বন্ধুরা মজা করে বলতো,
— "এত কষ্ট কেন করছিস? অন্যের কাছে সাহায্য চাইলে তো পারিস!"
রাজীব হাসতো, কিন্তু মন থেকে বলত— "অন্যের পা ধরে হাঁটা শিখলে আমি আমার নিজের পা ভুলে যাবো।"
সময় গেল। রাজীব প্রথমে ছোট একটা দোকান খুলল। শুরুতে খুব কষ্ট হলো, একা একা সামলাতে গিয়ে অনেক সময় টাল খেয়েছে, এমনকি দোকান বন্ধ করার মতো অবস্থা হয়েছে। কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। শক্তি যতটা ছিল, দৌড়েছে। পরে যখন শক্তি কমলো, তখন ধীরে হাঁটতে হাঁটতে দোকান চালিয়ে গেছে।
বছর পাঁচেক পর, রাজীবের সেই ছোট দোকান বড় সুপারশপে পরিণত হলো। যারা আগে হাসতো, তারাই তখন তার দোকান থেকে কিনতে আসতে লাগল।
একদিন এক পুরোনো বন্ধু তাকে জিজ্ঞেস করল—
— "তুই তো প্রথমে খুব কষ্ট করেছিলি, কেন অন্যের সাহায্য নিলি না?"
রাজীব শান্তভাবে বলল—
— "শক্তি থাকলে দৌড়াতে হয়, শক্তি কমে গেলে হাঁটতে হয়। কিন্তু অন্যের পা ধরে হাঁটতে শিখলে, সারা জীবন নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায় না।"
শিক্ষা:
জীবনে যতক্ষণ শক্তি আছে নিজের মতো চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দৌড়াতে না পারলে হাঁটতে হবে, কিন্তু কারও পা ধরে বাঁচার চিন্তা করলে কখনো নিজের সম্মান বা স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না।
