গোপন কথার পরিণতি
একজন মানুষ অনেকদিন ধরে মনে মনে একটা গোপন কথা লুকিয়ে রেখেছিল। কারও সাথে সে কখনও বলেনি, কারণ ভয় ছিল—যদি অন্যরা জেনে যায় তবে তার আর মুখ দেখানোর জায়গা থাকবে না।
কিন্তু একদিন হঠাৎ করে সে তার সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে ডেকে বলল,
– শোন, তোকে আমি একটা কথা বলব, কিন্তু শর্ত আছে।
বন্ধু জবাব দিল,
– হুম, বল। আমি তোকে ভাইয়ের মতো মানি। কারও সাথে শেয়ার করব না।
এই আশ্বাসে মানুষটা হালকা হলো। বুক চাপড়ে গোপন কথাটা বলেই ফেলল। তারপর বলল,
– শোন, এই কথা কিন্তু তুই কাউকে বলবি না, কসম!
বন্ধু গম্ভীর মুখে বলল,
– আরে ধুর! আমি কি সেই ধরনের মানুষ নাকি?
গোপন কথা ফাঁসের যাত্রা
পরের দিনই দেখা গেল, সেই গোপন কথা আর গোপন রইল না।
বন্ধু আরেক বন্ধুকে গিয়ে বলল,
– দেখ, আমি কিন্তু তোকে বিশ্বাস করি বলেই বলছি। কারও কাছে বলবি না।
এবার নতুন বন্ধু আবার আরেকজনকে গিয়ে বলল,
– আমি জানি তুই কাউকে বলবি না, তাই শেয়ার করলাম।
এভাবে “কারও কাছে বলবি না” শর্তটা সাথে নিয়েই গোপন কথাটা একদিনে পুরো মহল্লায় পৌঁছে গেল।
অবস্থার পরিবর্তন
যে মানুষটা এত কষ্ট করে গোপন লুকিয়ে রেখেছিল, এখন সে হাঁটতে বের হলেই লোকজন হাসাহাসি শুরু করে। কেউ চোখ টিপে, কেউ ইঙ্গিত করে, আবার কেউ সরাসরি বলে বসে,
– ভাই, গোপন কথা নাকি? আমরা তো জানি!
অবস্থাটা এমন হলো যে, মানুষটা বাজারে গিয়ে টমেটো চাইলে দোকানদার বলে,
– ভাই, আপনার গোপন টমেটোটা আমি আগেই রেখে দিয়েছি।
শেষ পরিণতি
শেষমেশ মানুষটা মাথা ধরে বলল,
– আফসোস! আমি যদি গোপন কথাটা ডায়েরিতে লিখতাম, তবে হয়তো এত লজ্জায় পড়তে হতো না।
বন্ধুদের কাছে গোপন রাখা মানে হলো—কূপে পানি ঢালা। কিছুক্ষণ শান্ত থাকবে, তারপর উপচে পুরো গ্রাম ভাসিয়ে দেবে।