বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প | সমাজের কিছু বাস্তব কথা

 বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

মীরা প্রেম করেছিল ভুল মানুষকে। ভেবেছিল ভালোবাসা মর্যাদা দেয়। সেই মানুষটি সম্পর্কের নামে তার শরীর চেয়েছিল, আত্মা নয়। একদিন সব ছেড়ে পালিয়ে এসেছিল মীরা। সমাজ বলল, “ও তো খারাপ মেয়ে, রাত-বিরাতে ছেলেদের সঙ্গে ঘোরা মেয়েরা এরকমই হয়।” অথচ কেউ বোঝেনি, ও পালিয়ে বেঁচেছিল, মরেনি বলে দোষী হলো।

---

জীবনের কিছু বাস্তব কথা

রুবি পেশায় একজন রাঁধুনি। এক নামজাদা হোটেলে কাজ করে সংসার চালাতো। তার গায়ে ছিল না ব্র্যান্ডের শাড়ি, চোখে ছিল না কাচের টানা কাজল। একদিন এক ভদ্রলোক মুচকি হেসে বলেছিল, “মেয়ে হয়ে এত রাত অবধি কাজ করা মানায় না, খুব নিচু মানসিকতার কাজ।” রুবি শুধু হেসে বলেছিল, “অপমান খেয়ে নয়, পেট চালিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচা শেখাই খারাপ কাজ হয় যদি, তাহলে হ্যাঁ, আমি খারাপ।”

---

বাস্তব জীবনের ফেসবুক স্ট্যাটাস

সোহানা তিন সন্তানের মা। স্বামী তাকে ছেড়ে গেছে অন্য নারীর জন্য। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবার কথা—“মেয়েটা নিশ্চয়ই খারাপ ছিল, না হলে পুরুষ মানুষ এমন করে না।” যেন স্বামীর ব্যাভিচার নয়, তার ধৈর্যহীন চোখ ছিল বড় অপরাধ। অথচ সোহানা আজও সন্তানদের মুখে হাসি রাখে, নিজের কান্না লুকিয়ে।

---

বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

জারিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ হয়। ক্লাসে ছেলেদের থেকে ভালো করে কথা বলে, যুক্তিতে হারিয়ে দেয় কাউকে। একদিন পেছন থেকে কেউ বলল, “এই মেয়ে একটু বেশিই চালাক, এত মিশুক মেয়েরা ভালো হয় না।” জারিন জানে, এই সমাজের চোখে নারীর জ্ঞান এক ধরণের ভয়—আর ভয় দেখালেই নারী হয় খারাপ।

---

বাস্তব জীবনে ঘটা বুলিং এর উদাহরণ

আনোয়ারা চাচি গৃহপরিচারিকা ছিলেন। একদিন বাড়ির পুরুষ সদস্য তার গায়ে হাত তুলেছিল। চিৎকার করলে ও বলল, “তুই তো এমনিতেই খারাপ কাজ করিস, তোকে নিয়ে কেউ ভাববে না।” লোকটা বেঁচে গেল, আনোয়ারা হারিয়ে গেল। সমাজ শুধু গরিব নারীর মুখ বন্ধ রাখতে জানে, ন্যায় নয়।

---

জীবনের কিছু বাস্তব কথা স্ট্যাটাস

ফারজানা একদিন একটা ছেলেকে ধমক দিয়েছিল—অশ্লীল মন্তব্য করার কারণে। সে প্রতিবাদ করেছিল, থানায় গিয়েছিল। পাড়ায় তার নামে ছড়িয়ে গেল, “ছেলেদের পেছনে লাগে, খারাপ মেয়ে তো।” অথচ কারও মুখে আসেনি সেই ছেলেটার নাম, যার খারাপতা ছিল আসল, কিন্তু লুকিয়ে গেল ‘ভদ্রতার মুখোশে।’

---

সমাজের কিছু বাস্তব কথা

মাহি একটা নাটকে অভিনয় করেছিল এক যৌনকর্মীর চরিত্রে। অভিনয়ের বাইরে সে ছিল শিক্ষিকা। ছাত্রের অভিভাবক বলেছিল, “ওই খারাপ চরিত্রে কাজ করলে আপনার নিজের চরিত্রও খারাপ হয়।” কেউ বোঝে না, চরিত্রে ঢুকতে গেলে মানুষকে বুঝতে হয়—আর বোঝা মানেই সমাজের চোখে ‘খারাপ’ হওয়া।

---

জীবনের কিছু বাস্তব কথা

নুসরাত চাকরি পায় একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বস তাকে অফিস পার্টিতে নিজের সঙ্গী হতে বলে। সে না বলে দেয়। কয়েকদিন পর নুসরাতকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়, কারণ সে "সহযোগিতা করে না"। পরে বলা হয়, “ব্যবহারে সমস্যা ছিল, খারাপ মেয়েদের মতো আচরণ।” নারীর 'না' মানেই এ সমাজে সে খারাপ।

---

সমাজের কিছু বাস্তব কথা

রাহেলা ম্যাডাম গ্রামের স্কুলে পড়ান। এক বিধবা নারী হয়েও তিনি হাসেন, কথা বলেন, সাজেন। গ্রামের কিছু পুরুষ ফিসফিস করে—“ওর চালচলন ভালো না, বিধবা হয়ে এত মেলে চলে!” বিধবা হলে দুঃখী থাকা উচিত—এটাই নাকি শালীনতা। সুখ খোঁজার চেষ্টা করলেই একজন নারী হয়ে ওঠে ‘খারাপ’।

Previous Post Next Post