পুরুষ টাকার মেশিন | পুরুষদের টাকার লড়াই

 ১. পুরুষ টাকার মেশিন

শামীম বিদেশ গিয়েছিল সংসার গুছাতে। আট বছর পর দেশে ফিরেই শুনল, তার বাবা হাসপাতালে। শামীম চোখ ভিজিয়ে বাবার হাত ধরল। বাবা চোখ তুলে বললেন, “তুই টাকা দিস ঠিকই, কিন্তু তোর ছোঁয়া পাই না রে বাবা। তুই আমাদের ছেলে না, আমাদের টাকার মেশিন হয়ে গেছিস।”

পুরুষ টাকার মেশিন

---

২. টাকার মেশিন অচল

জসিম ভাই কাতারে কাজ করতে গিয়ে একদিন উঁচু ভবন থেকে পড়ে গেলেন। পা ভেঙে গেল, আর কাজ করতে পারেন না। অফিসের বেতন বন্ধ, ভিসাও বাতিল। দেশে ফোন দিলে স্ত্রীর কণ্ঠে বিরক্তি—"তুমি এখন অচল! দেশে আসলে চলবে কী করে?" জসিম বুঝল, তার দরকার ছিল শুধু চলার সময়টা পর্যন্ত।

---

৩. একটা টাকার মেশিন

রবিন শুধু কাজ করে, ঘুমায়, আবার কাজ করে। ঈদের দিনেও কোনো ছুটি নেয় না। বন্ধু জিজ্ঞেস করল, “তুই এত কষ্ট করিস ক্যান?” রবিন উত্তর দিল, “আমি তো আর মানুষ না, ভাই। আমি একটা টাকার মেশিন। মায়ের ওষুধ শেষ হয়ে গেলে যেন থেমে না যাই।”

---

৪. প্রবাসী টাকার মেশিন

সুলতান ১৪ বছর ধরে দুবাইতে। নিজের জন্য একজোড়া ভালো জুতা কেনেনি। দেশে যখন ফোন করে, শুধু শোনা যায়—“টাকা দাও, এটাতে ইনভেস্ট করো, ওখানে জমি কিনো।” কেউ একবারও জিজ্ঞেস করেনি, সে কেমন আছে। সুলতান ভাবে, আমি কি আসলেই প্রবাসী মানুষ, না কেবল একটা ইনকাম সোর্স?

---

৫. আমি এক টাকার মেশিন

রিয়াজ একা থাকে মালয়েশিয়ায়। দেশে থাকা বোনের বিয়ে দিয়েছে, বাবার চোখের অপারেশন করিয়েছে, কিন্তু নিজের জন্য নতুন জামাও কিনেনি। একদিন আয়নায় তাকিয়ে বলে, “আমি রিয়াজ না, আমি একখান টাকার মেশিন, যার মুখে শুধু টাকা বের হয়, কিন্তু হাসি বের হয় না।”

---

৬. একটা টাকার মেশিন প্যাকেট হয়েছে সাদা কাপড়ে

হাসান ভাই সৌদিতে মারা যান স্ট্রোকে। কেউ জানত না তার কী হয়েছে। তিনদিন পর লাশ মর্গে মেলে। দেশে যখন কাফনে মোড়া লাশ ফেরত যায়, তখন কেউ কান্না করে না, সবাই হিসাব কষে—"এত বছর টাকা পাঠাল, শেষে খালি হাতে চলে গেল।"

---

৭. একটা টাকার মেশিন পেকেট হইছে

রিফাত ভাই কুয়েতে হিট করে পড়ে যান। হসপিটালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু। কোম্পানি তার বডি প্যাক করে দেশে পাঠায়। তার ভাই কফিন খুলে শুধু বলে, “ও তো টাকার মেশিন ছিল। এখন বন্ধ হয়ে গেছে। মেশিন প্যাকেট হইছে।”

---

৮. টাকার মেশিন প্রবাসী জীবন

কামাল ভাই ১১ বছর ধরে ওমানে। প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজ করে। দেশে কেউ ভাবে না, তারও পিঠে ব্যথা হয়, তারও মন খারাপ হয়। ছেলে বলে, “আমার বন্ধুদের বাবা ঈদের দিন বাসায় থাকে, তুমি থাকো না কেন?” কামাল উত্তর দেয় না। সে জানে, এটা টাকার মেশিনের জীবন।

---

৯. টাকার মেশিন হারিয়ে গেছে

ফারুক ভাই মালয়েশিয়া থেকে হঠাৎ নিখোঁজ। কেউ খোঁজ নেয় না। তার পরিবার থানায় জিডি করে। চার মাস পর খবর আসে—ফারুক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, রাস্তার পাশে ঘুরে বেড়ায়। সে এখন টাকা পাঠাতে পারে না, তাই কেউ আর তাকে খোঁজে না।

---

১০. টাকার মেশিনে মরিচ লেগেছে

তানভীর ভাই দুই বছর ছুটি নেন। দেশে ফিরে দেখেন, স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। তিনি বোঝেন না, কোথায় ভুল ছিল। পরে স্ত্রী বলে, “তুমি টাকা পাঠাও ঠিকই, কিন্তু আমার পাশে ছিলে না।” টাকার মেশিনে তখন মরিচ লেগে যায়—চোখে, মনে, শরীরে।

Previous Post Next Post