ভালোবাসা—শব্দটা শুনলেই হৃদয়ের ভেতর একটা নরম জায়গা কাঁপতে শুরু করে। মানুষ ভাবে ভালোবাসা মানেই সুখ, মানেই ভরসা, মানেই নিরাপদ আশ্রয়। কিন্তু যখন সেই ভালোবাসা ধোঁকায় রূপ নেয়, তখন বুঝতে পারা যায় জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর আঘাতটা ঠিক কেমন হয়। ধোঁকা শুধু মন ভাঙে না, সেটা মানুষকে ভেতর থেকে খালি করে দেয়।
ভালোবাসার ধোঁকা এমন এক ব্যথা, যেটা চোখে দেখা যায় না, কিন্তু বুকের ভেতর আগুন ধরিয়ে দেয়। যে মানুষটাকে নিজের সবকিছু ভেবে বিশ্বাস করেছিলে, তার হাত ধরেই যখন ধ্বংসের দিকে পড়তে হয়, তখন মনে হয় পৃথিবীতে আর কেউ নেই পাশে। যে মানুষটা একসময় বলত—“আমি ছাড়া তুমি বাঁচতে পারবে না”—সেই মানুষটাই যখন হঠাৎ চলে যায়, তখন শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়।
ধোঁকার ভয়ংকর দিক হলো—এটা শুধু সম্পর্ক ভাঙে না, মানুষের নিজের ওপর বিশ্বাস ভেঙে দেয়। মনে হয়, আর কাউকে কি বিশ্বাস করা যাবে? আর কাউকে কি মন খুলে ভালোবাসা যাবে? ধোঁকা পাওয়া মানুষরা অনেক সময় নিজের ছায়াকেও সন্দেহ করে। রাতে ঘুম আসে না, দিনে চারপাশের আনন্দ গলার কাঁটা হয়ে যায়।
আরেকটা কঠিন ব্যাপার হলো একাকীত্ব। ধোঁকা মানুষকে এমন একা করে দেয়, যেটা পরিবার-বন্ধুর মাঝেও থেকে যায়। মানুষ হাসে, আড্ডা দেয়, কাজ করে, কিন্তু ভেতরের সেই শূন্যতা কেউ বোঝে না। ধোঁকা মানুষকে শেখায়—সবাই কাছে আসে না ভালোবাসতে, কেউ কেউ আসে শুধু নিজের প্রয়োজন মেটাতে।
ভালোবাসার ধোঁকা যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা বোঝা যায় তখন, যখন একজন মানুষ জীবনের স্বপ্ন, আশা, বিশ্বাস—সবকিছু একসাথে ভেঙে যেতে দেখে। এই ধোঁকা হয়তো কাউকে একেবারে শেষ করে দেয়, আবার কেউ এটাকে শিক্ষা বানিয়ে আরও শক্ত হয়ে ওঠে।
কিন্তু একটা জিনিস চিরসত্য—ধোঁকা মানুষকে কষ্ট দেয়, একা বানিয়ে দেয়, আর শিখিয়ে দেয়—ভালোবাসা দেওয়ার আগে হাজারবার দেখতে হবে, তুমি কাকে ভালোবাসছো। কারণ ভুল মানুষকে ভালোবেসে দিলে, সেই ভালোবাসাই তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় শাস্তি হয়ে দাঁড়ায়।
