🌿 সমস্যার বোঝা আর মজার দর্শক
রুবেল নামের এক ছেলে ছিল। ওর জীবনে সবসময় ঝামেলা লেগেই থাকতো।
কখনও টাকা নেই, কখনও প্রেমিকা রাগ করেছে, কখনও আবার অফিসে বস বকছে।
রুবেলের সব অভিযোগ একটাই—
👉 “জীবনটা এত কঠিন কেন? মানুষজন কেন আমাকে সাহায্য করে না?”
একদিন অফিসে বসের কাছে বকা খেয়ে রুবেল অফিসের ক্যান্টিনে গিয়ে চায়ের কাপ নিয়ে বসে ছিল।
মুখটা হাঁড়ির মতো গোমড়া। পাশের বন্ধুরা হাসাহাসি করছে, মজা করছে।
ওই সময় রুবেলের মাথায় আগুন—
“আমি এখানে কষ্টে পুড়ছি, আর ওরা মজা নিচ্ছে। এটা কেমন অবিচার?”
সেই রাতে রুবেল স্বপ্ন দেখলো।
স্বপ্নে সে একটা বিশাল মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। তার কাঁধে ভারী বস্তা বাঁধা।
মাঠের চারপাশে হাজারো মানুষ বসে আছে, সবাই হাততালি দিয়ে হেসে হেসে তাকিয়ে আছে।
রুবেল চিৎকার করে বললো—
“এত লোক দাঁড়িয়ে আছো, কেউ কি এসে আমার বোঝা ধরবে না?”
কিন্তু সবাই শুধু বললো—
👉 “আমাদের কাজ তো তোমার বোঝা দেখা, বহন করা নয়।”
সেই সময় এক বৃদ্ধ এসে বললো—
“বাবা, বোঝা তোমার, বহনও তোমাকেই করতে হবে। পৃথিবী শুধু দর্শক,
তুমি পড়ে গেলে তারা হাসবে, তুমি দাঁড়িয়ে গেলে তারা হাততালি দেবে।
কিন্তু কাঁধে বস্তা চাপাবে বা নামাবে—ওটা কেবল তোমার কাজ।”
রুবেল ঘেমে-নেয়ে ঘুম ভাঙলো।
এবার তার মাথায় পরিষ্কার হলো—
👉 সমস্যা আমার, সমাধানও আমার। অন্যরা শুধু দর্শক, মজা নেবে, উপদেশ দেবে, কিন্তু বাঁচাবে না।
এরপর থেকে রুবেল বদলে গেলো।
অফিসে বকাঝকা হলে আর গোমড়া মুখ করতো না। ভাবতো,
“বস রাগ করেছে, কিন্তু সমাধান আমারই খুঁজতে হবে।”
টাকা কম হলে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ না করে, নতুন কাজ খুঁজে নিলো।
প্রেমিকা রাগ করলে আর বকা খেতো না, বরং ধৈর্য নিয়ে বলতো,
“তুমি যদি থাকতে চাও থাকো, আমি নিজের জীবন থামাবো না।”
ধীরে ধীরে সবাই অবাক হয়ে গেলো।
যে রুবেল সবসময় অভিযোগ করতো, সেই রুবেল এখন অন্যদেরকে মোটিভেট করছে।
বন্ধুরা হাসতো, এবার রুবেলের সাথে হাসতো।
🌟 শিক্ষাটা কী?
জীবন কঠিন হবেই।
কেউ তোমার কাঁধে বোঝা বইবে না।
তুমি যদি সমস্যাকে নিজের করে নাও, তবেই সমাধান আসবে।
অন্যরা শুধু বাইরে দাঁড়িয়ে দেখে যাবে, কেউ হাসবে, কেউ উপদেশ দেবে, কেউ দুঃখ দেখাবে।
কিন্তু বোঝা নামানোর কাজ তোমার নিজেরই।
👉 তাই মনে রাখো, সমস্যা কার তোমার, সমাধানও তোমার।
পৃথিবী দর্শক, তুমি খেলোয়াড়।
খেলতে খেলতে যদি পড়ে যাও, হাসাহাসি সহ্য করো,
কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে আবার খেলো—তাহলেই একদিন তুমিই বিজয়ী হবে।