গল্প: বারোভাতারির ফাঁদ
তাকে কেউ এক নামে চিনে না। কোনো ছবি সে পোস্ট করে না, কোনো ছেলের সঙ্গে পথচলাও কেউ দেখতে পায় না। অথচ—তার নামে চলে বারোটা গল্প, বারো রকম অভিনয়, বারো রকম প্রয়োজন।
সে যেন সম্পর্কের বাজারে এক অসাধারণ খেলোয়াড়।
প্রথম পরিচয়, চোখে জল—
“আমার মা খুব অসুস্থ, বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। সব কিছু নিজেকেই সামলাতে হয়।”
এই কথা শুনে প্রথম ছেলেটি নিজের চাকরির বেতন থেকে কিছু টাকা তুলে দেয়।
দ্বিতীয় পরিচয়ে—
“আগের একটা সম্পর্ক ছিলো, খুব ভেঙে পড়েছিলাম, এখন কাউকে বিশ্বাস করতে ভয় পাই।”
এই বলে সে দ্বিতীয়জনের কাছ থেকে বিশ্বাস কিনে নেয়। সময় নেয়, আস্থা নেয়, তারপর চাহিদা তোলে—“একটা ফোন দরকার, অনলাইন ক্লাস করতে হয়।”
তৃতীয়জনের সামনে সে একেবারে আত্মবিশ্বাসী, উদ্যোক্তা টাইপ—
“আমি একা একটা অনলাইন বিজনেস করছি, পাশে কেউ থাকলে ভালো হতো।”
এই ছেলেটি তার ‘পার্টনার’ হয়ে অনেক টাকা খরচ করে দেয় ‘স্টার্টআপের’ নামে।
চতুর্থজনের সামনে সে খুব রোমান্টিক।
নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বলে—
“তুমি ছাড়া আর কাউকে দেখতেই পারি না। তুমি যদি সাথেই থাকো, আমি জীবন গড়তে পারবো।”
এভাবে চলতে থাকে। ছেলেরা ভাবে তারা তার প্রেমিক। কেউ ভাবছে, সে শুধু তারই জন্য অপেক্ষা করছে।
কেউ ভাবছে—“ওর জীবনটাকে আমি বদলে দেবো।”
কেউ মনে করছে—“আমার মতো কেউ তাকে কখনও ভালোবাসেনি।”
কিন্তু বাস্তবে, সে সময় মেপে কথা বলে। সকালে এক ছেলের মেসে ‘ঘুরতে’ গিয়ে বিকেলে অন্য ছেলের বাড়ির সামনে ‘চট করে দেখা’। রাতে আবার এক তৃতীয়জনকে নিয়ে ‘লাইফ প্ল্যান’।
সব সম্পর্কের পেছনে আছে প্রয়োজন। টাকা, উপহার, সুবিধা।
কখনও মা অসুস্থ, কখনও ভাড়া বাকি, কখনও ল্যাপটপ নষ্ট, কখনও চাকরির ইন্টারভিউতে যাওয়ার টাকা নেই।
কেউ কিছু টের পায় না...
কারণ সে সবার কাছে নিজের জীবনকে নাটকের মতো করে তোলে।
এমন ভাবে চোখে জল এনে কথা বলে—ছেলেগুলো ভাবে,
> “আহা, এমন একটা মেয়েকে কষ্ট দিয়ে কি কেউ বাঁচে?”
একদিন, একরাতে, দুইজন ছেলে মেসে বসে গল্প করছিলো। কথায় কথায় উঠে আসে "প্রেমিকা" নিয়ে কথা। ছবি নেই, পোস্ট নেই, শুধু বলা—“ও চায় না ওকে কেউ দেখুক।”
তাদের বর্ণনা মিলে যায়।
একই হাসি, একই অভিমান, একই গল্পের ছায়া...
সন্দেহ থেকে খোঁজ শুরু হয়।
ধরা পড়ে সত্য
ধরার পর তার একটাই উত্তর—
> “আমি কাউকে ঠকাইনি। সবাই নিজের ইচ্ছায় দিয়েছে। আমি চেয়েছি, ওরা দিয়েছে।”
তার চোখে জল নেই। অনুতাপ নেই। সে ভাবছে—
> “যদি ছেলেরা শুধু শরীরের জন্য মেয়েদের ব্যবহার করে, আমি কেন একটু সুবিধা নিতে পারবো না?”
তার জন্য প্রেম ছিলো প্রজেক্ট।
সম্পর্ক ছিলো ইনভেস্টমেন্ট।
ভালোবাসা ছিলো সুযোগ।
---
ছোট পরমর্শ
এই গল্পে না আছে নাম, না পরিচয়।
এই গল্প আজকের দিনের।
এক শ্রেণির মেয়েরা আজ প্রেমকে পেশায় রূপ দিয়েছে—ভালোবাসাকে ব্যবসা বানিয়েছে।
আর বিশ্বাস করে যারা প্রেমে পড়ে যায়, তারা শুধু দেয়, আর দেয়—শেষে ফিরে পায় একটা প্রশ্ন,
> “আমি কি শুধু ব্যবহার হয়েছিলাম?”
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘গল্পের রাজ্য.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com
এমন মন ছুয়ে যাওয়া গল্প পরতে ভিজিট করুন ক্লিক