১. কম বয়সে বিয়ে নিয়ে হাদিস
ইসলামে বিবাহ কোনো সামাজিক চুক্তি নয়, বরং তা একটি ইবাদত ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ।
তিনি বলেন:
“বিয়ে আমার সুন্নাহ, এবং যে আমার সুন্নাহকে পরিত্যাগ করল, সে আমার দলভুক্ত নয়।”
– (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
একবার এক যুবক নবীজির (সা.) কাছে এসে জানাল, সে বিয়ে করতে চায় না, বরং সারাজীবন ইবাদতে কাটাবে। নবীজি (সা.) তাঁকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে বললেন, বিয়ে ইসলামি জীবনের অংশ এবং যুবকদের জন্য তা গুনাহ থেকে বাঁচার ঢাল।
---
২. কম বয়সে বিয়ে করার উপায়
ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় যে বয়সের আগে নয়, বরং পরিপক্বতা, দায়িত্ববোধ ও দ্বীনের জ্ঞান থাকলেই বিবাহ করা উচিত।
কম বয়সে বিয়ে করতে চাইলে করণীয়:
নিজেকে দ্বীন ও চরিত্রে গড়ে তোলা
অভিভাবকের সহযোগিতা নেওয়া
বিনয় ও ধৈর্যের সঙ্গে উপযুক্ত পাত্রী/পাত্র খোঁজা
দোয়া ও তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া
অহেতুক বিলাসিতা ও ফাযুল খরচ বাদ দিয়ে সহজ বিয়ে করা
আল্লাহ বলেন:
“আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহে অভাবমুক্ত করে দেবেন।”
– (সূরা আন-নূর, আয়াত ৩২)
---
৩. কম বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা
ইসলামের দৃষ্টিতে কম বয়সে বিয়ে করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
যেমন:
নিজ চোখ ও লজ্জাস্থান হেফাজত হয়
শয়তানের ফাঁদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
মানসিক প্রশান্তি ও আত্মিক তৃপ্তি আসে
পরিণত বয়সে সন্তান ও পরিবার গঠন সহজ হয়
নেক সন্তান লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে
রাসূল (সা.) বলেন:
“যে ব্যক্তি বিয়ে করল, সে তার অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করল।”
– (আল-বাইহাকী)
---
৪. কম বয়সে বিয়ে
আজকাল সমাজ যেভাবে বয়সকে প্রধান বিবেচনা করে, ইসলাম তা করে না।
ইসলামে বয়সের তুলনায় চরিত্র, দ্বীনদারতা ও পরিপক্বতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যে যুবক-যুবতী নিজের প্রবৃত্তিকে সংযত রাখতে চায়, দ্বীনের মধ্যে থেকে জীবন গঠন করতে চায়, তার জন্য বিয়েই সর্বোত্তম পথ। নবীজি (সা.) নিজেও অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন এবং সাহাবীরাও সেই পথে চলেছেন।
---
৫. কম বয়সে বিয়ে করার অপকারিতা
যদি কেউ দ্বীনের জ্ঞান ছাড়া, কেবল প্রবৃত্তির তাড়নায় বা আবেগে পড়ে বিয়ে করে ফেলে, তাহলে কিছু অপকার হতে পারে:
দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা
পরিবারে ঝগড়া, অনাস্থা ও বিচ্ছেদ
অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়া
ইবাদত থেকে মনোযোগ সরে যাওয়া
ইসলাম সব সময় চিন্তা-ভাবনা ও মসলা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলে।
আল্লাহ বলেন:
“তোমরা যা করো, তার বিষয়ে চিন্তা করো। আল্লাহ চিন্তাশীলদের ভালোবাসেন।”
– (সূরা হাশর: ১৮)