বাবার ভালোবাসা ও মেয়ের অবহেলা: বাবার প্রতি | বাবা-মেয়ের ভালোবাসা

 বাবা মেয়ের ভালোবাসা কতটা গভীর

বাবা মেয়ের ভালোবাসা কতটা গভীর

সকালবেলা স্কুলে যাওয়ার সময় মেয়েটি বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল,

— “বাবা, আমাকে আজকে স্কুল গেট পর্যন্ত তুমি নিয়ে যাবে?”

বাবা তখন ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে বলেছিল,

— “আজ না মা, অফিসে দেরি হয়ে যাবে।”

মেয়েটি কিছু না বলে মাথা নিচু করে স্কুলে চলে গিয়েছিল।

এই মেয়েটির নাম ছিল রাইনা। বয়স মাত্র ৯। আর তার বাবা রশিদ সাহেব—একজন সাধারণ অফিস কর্মচারী। সংসারের অভাব-অনটন কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও মেয়ের পড়ালেখা, জামাকাপড়, স্বপ্নগুলো পূরণ করতে গিয়ে প্রতিদিনই নিজের খরচ কাটছাঁট করে চলেছেন।

রাইনার স্কুল ফি দিতে গিয়ে গত মাসে নিজের প্রয়োজনীয় জুতা না কিনে পুরোনো ছেঁড়া জুতায় অফিস করেছেন। মেয়েটি যেন কিছু টের না পায়, সেজন্য বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসের দরজায় গিয়ে জুতা বদল করে পায়ের ব্যথা চেপে রেখে হেসেছেন।

তবুও রাইনার অভিমান হয়—

— "বাবা আমার জন্য কিছুই করে না, সব সময় বলে সময় নেই!"

দিন যায়, মাস যায়। একদিন স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে মেয়েদের বাবা-মায়ের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল। বাবা অফিস থেকে ছুটি নিয়েও এসে দাঁড়িয়েছিলেন মাঠের এক কোণে—সবার থেকে দূরে। রাইনা তাঁর বাবাকে দেখতে পায় না। চোখে পানি নিয়ে মঞ্চে উঠে পারফর্ম করে, কিন্তু মন খারাপ থাকে।

রাইনা বাড়ি ফিরে একটাও কথা বলে না। বাবাও কিছু বলেন না। রাত ৩টায় ঘুম থেকে উঠে পানি খেতে গিয়ে মেয়ের ঘরের আলো দেখে থমকে দাঁড়ান। ভেতরে যান। দেখে—রাইনা ডায়েরি লিখছে।

বাবা কৌতূহলবশত ডায়েরির একটি পাতায় চোখ রাখেন। সেখানে লেখা—

— “সবাই যখন বলছিল বাবা কোথায়, তখন আমি চুপ ছিলাম। কারণ আমি জানি, আমার বাবা শুধু সামনে দাঁড়ায় না, তিনি পেছনে দাঁড়িয়ে আমার জন্য আকাশ নামিয়ে আনার চেষ্টা করেন।”

বাবার চোখে পানি চলে আসে। চুপচাপ মেয়ের মাথায় হাত রেখে ঘর থেকে বের হয়ে যান।

পরদিন রাইনার স্কুলে জন্মদিন। সবাই চমকে ওঠে, যখন দেখে মেয়েটির বাবা হাতে কেক আর ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাইনা দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে। কিছু না বলে শুধু ফিসফিসিয়ে বলে—

— “তুমি আমার হিরো, বাবা।”

সে মুহূর্তে রশিদ সাহেব বুঝলেন—

পৃথিবীর সব ছেলেমেয়ে চায় একজন বন্ধু, এক সহযোদ্ধা। আর একজন মেয়ের কাছে যদি কেউ সবচেয়ে দামি হয়—তবে সে হল তার বাবা।

---

শিক্ষণীয় হচ্ছে:

> মেয়েরা বাবার প্রতি একটু চাওয়া- একটু অভিমান করে, কিন্তু তারা ভালোবাসে সবচেয়ে নিঃস্বার্থভাবে। আর একজন বাবা নিজের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে মেয়ের মুখের হাসি রক্ষা করে। এই সম্পর্ক ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝানো যায় না—এটি অনুভবের।

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘গল্পের রাজ্য.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com

এমন মন ছুয়ে যাওয়া গল্প পরতে ভিজিট করুন ক্লিক

Previous Post Next Post