স্বামী নয় অন্যকে চায় স্ত্রী | মেয়েটির স্বাধীনতা: তার সংসার তছনছ করে দিয়েছে

 গল্প: মারিয়ার সেই চিতকারের কারণ

স্বামী নয় অন্যকে চায় স্ত্রী

মারিয়া—নামটির মতোই ছিল সে মায়াবতী। মুখে সারাক্ষণ হাসি, চোখে স্বপ্ন। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারায়। মায়ের কাঁধে চাপ পড়ে সংসারের পুরো ভার। মায়ের একটাই স্বপ্ন—মেয়েটাকে মানুষ করা, একটু স্বস্তিতে বিয়ে দেওয়া।

সময় চলে যায়, মারিয়া বড় হয়। সুন্দর, মার্জিত এবং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। একদিন এক মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ছেলেটি শহরে একটি প্রাইভেট অফিসে চাকরি করে, আহামরি কিছু না, তবে সৎ, শান্ত এবং দায়িত্ববান।

বিয়ের পর স্বামী মারিয়াকে শহরে নিয়ে যায়। প্রথমদিকে সব ভালোই চলছিল। কিন্তু এক সময় মারিয়া জানায়—

"আমি আবার পড়াশোনা শুরু করতে চাই। আমার স্বপ্ন আছে, পড়া শেষ করব!"

স্বামী চুপ করে থাকে। সে হিসেব করে, সংসার, অফিস, বাজার, ভাড়া—সব কিছু সামলে আরেকজনের পড়াশোনার খরচ? অসম্ভব!

সে সরলভাবে বলে—

"এখন সময়টা একটু কঠিন, পরে না হয় ভেবে দেখব!"

কিন্তু মারিয়া রেগে যায়—

"তুমি আমাকে বন্দি করে রাখতে চাও? আমি কি শুধু রান্নাবান্না করার জন্য বিয়ে করেছি? আমি নিজেকে গড়তে চাই। যদি না পড়তে দাও, আমি সংসার করব না!"

স্বামী একরকম বাধ্য হয়ে রাজি হয়।

কলেজে ভর্তি হয় মারিয়া।

প্রথম কয়েক সপ্তাহ সব স্বাভাবিক।

কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে সে বদলাতে শুরু করে।

নতুন বান্ধবী, নতুন সাজ, স্মার্টফোন, সেলফি, লাইভ ভিডিও—এসব নিয়েই সে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

ঘরে রান্না নেই, স্বামীর কথা শোনে না, দিন দিন হয়ে যায় উদাসীন।

একদিন ক্লাসের এক ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ছেলেটি মারিয়ার সুন্দর মুখ, খোলা জীবন আর সরল মনকে সহজেই ব্যবহার করতে শেখে।

কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হয় শারীরিক সম্পর্ক।

মারিয়া নিজের সংসার ভুলে যেতে থাকে।

বাড়ি ফেরে দেরিতে, অজুহাত হয় পড়ার চাপ।

স্বামী বুঝতে পারে কিছু একটা গড়বড়, কিন্তু মুখ খোলে না।

এক রাতে মারিয়া ফেরে না। ভোরে ফিরে বলে—

"বন্ধুর বাসায় ছিলাম। হঠাৎ শরীর খারাপ হয়েছিল!"

স্বামী তখন আর কিছু বলে না।

তবে সে একদিন অনুসরণ করে মারিয়াকে।

সবকিছু তার সামনে স্পষ্ট হয়ে যায়।

মারিয়া তার প্রতারণার জালে নিজেই বন্দি।

স্বামী তাকে জিজ্ঞেস করে—

"এই সম্পর্কের মানে কি? তুমি কি বুঝতে পারছ কী করছো?"

মারিয়া উচ্চস্বরে চিৎকার করে—

"তুমি আমায় বোঝো না, তাই অন্য কেউ আমার পাশে এসেছে!"

স্বামী স্তব্ধ হয়ে যায়।

পরদিন মারিয়া সেই ছেলের কাছে যায়—যার জন্য সে নিজের ঘর, স্বামী, সম্মান সব কিছু জলাঞ্জলি দিয়েছে।

কিন্তু সেই ছেলেটি বলে—

"তুমি আমার জন্য এক রাতই যথেষ্ট ছিলে। আমি সংসার খুঁজি না, খেলা খুঁজি। এবার তুমি যেতে পারো!"

মারিয়া যেন পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায় না। ছেলেটির কণ্ঠে কোনো দয়া নেই, নেই কোনো বন্ধন। সে শুধু ব্যবহার করেছে মারিয়াকে।

মারিয়া তখন স্বামীর কাছে ফিরে আসে, কাঁদে, অনুনয় করে, কিন্তু স্বামী এবার চুপচাপ তালাকনামা এগিয়ে দেয়।

"ভুল একবার হয়, বারবার নয়। তুমি নিজেই নিজেকে নষ্ট করেছো, আমি আর পারছি না!"

মারিয়া পড়ে যায় রাস্তায়। কাঁদে, চিতকার করে—

"আমার কেউ রইল না! মা, তুমি আমাকে নিয়ে চলো..."

তার মা এসে একবার দেখে মেয়েকে। চোখে জল, কিন্তু মুখে কঠোরতা।

"তুই আমার মেয়েই থাকলি না মারিয়া। আমি তোর মুখ হারিয়েছি এই সমাজে!"

আজ মারিয়া একা। নেই ঘর, নেই পরিবার, নেই প্রেম।

আছে কেবল লজ্জা, অনুশোচনা আর সমাজের তিরস্কার।

একসময় যে স্বাধীনতা চেয়েছিল সে, এখন সেই স্বাধীনতার চাপে সে পিষ্ট।

রাতের নিস্তব্ধতায় মাঝে মাঝে শোনা যায়—

"আমি ভুল করেছি... আমি শুধু একটু বুঝতে চেয়েছিলাম... এখন বুঝি, কিন্তু দেরি হয়ে গেছে..."

---

গল্পের শিক্ষা:

এই গল্প কোনো একক নারীর নয়।

এই গল্প সেইসব ভুল পথে হাঁটা প্রতিটি মেয়ের জন্য সতর্কবার্তা—

"শরীর দিয়ে সম্মান কেনা যায় না, ভালোবাসা আসে না, বরং আসে অপমান, অবহেলা আর একাকীত্ব।"

সঠিক পথে ফিরে আসার সময় থাকতেই ফিরে আসুন।

স্বাধীনতা মানেই নিজের দায়িত্ব নিজে বোঝা, আর সম্পর্ক মানেই শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের ভিত্তি।

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘গল্পের রাজ্য.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com

এমন মন ছুয়ে যাওয়া গল্প পরতে ভিজিট করুন ক্লিক

Previous Post Next Post