স্ত্রীকে পর্দা করাবেন কেন? বাহিরের পুরুষ নারীদের কি নজরে দেখে

নারীর জন্য পর্দা কতটা উপকার ও দরকার

বিষয়: স্ত্রীকে পর্দা করাবেন কেন? — একজন স্বামীর দৃষ্টিতে বাস্তবতা ও দায়িত্ব

একজন স্ত্রী, একজন পুরুষের জীবনের সবচেয়ে সম্মানিত, মূল্যবান ও অমূল্য রত্ন। আর এই রত্নকে রক্ষা করা স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব।

পর্দা শুধুই একটি কাপড় নয়—এটা নারীকে রক্ষা করার ঢাল, সম্মান ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।

স্ত্রীর সৌন্দর্য কেবল স্বামীর জন্য

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নারীর সৌন্দর্যকে অত্যন্ত মহামূল্যবান করে সৃষ্টি করেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, নারীরা যেন নিজেদের সৌন্দর্য, সাজসজ্জা ও আকর্ষণীয় অঙ্গভঙ্গি গোপন রাখে, যাতে বাহিরের পুরুষেরা কুপ্রবৃত্তির দিকে না ঝুঁকে।

"আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তবে যা অনিচ্ছায় প্রকাশ পায় তা ছাড়া।"

— (সূরা আন-নূর, আয়াত ৩১)

স্বামী হিসেবে আপনিই হচ্ছেন স্ত্রীর নিরাপত্তার প্রাচীর।

যদি আপনি নিজেই সেই প্রাচীর না হন, তবে বাহিরের দৃষ্টি তার দিকে ছুটে আসবে—লালসা, কুপ্রবৃত্তি, কিংবা পশুত্বের দৃষ্টিতে।

বাহিরের পুরুষেরা কীভাবে দেখে আপনার স্ত্রীকে?

বাস্তবতা হলো,

প্রতিদিন রাস্তাঘাটে, মার্কেটে, অফিসে, শপিং মলে হাজারো কু-দৃষ্টি ঘুরছে।

যে চোখগুলো দেখছে আপনার স্ত্রীকে, তাদের অনেকেই দেখে কামনার চোখে, কেউবা দেখে কল্পনায় অশ্লীল দৃশ্য তৈরি করে।

আপনার স্ত্রী যত আধুনিক পোশাকেই থাকুক না কেন,

অধিকাংশ পুরুষের মনে সে রয়ে যায় "একটি দৃষ্টিকটু কল্পনার বস্তু"।

একজন স্ত্রী যত সুন্দর হবে, তত বেশি নজর পড়বে তার উপর।

আর প্রতিটি নজর শুধু চোখ দিয়ে নয়, বরং সেই নজর প্রবেশ করে চরিত্রে, দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং কল্পনায়।

আজকালকার ডিজিটাল দুনিয়ায়, একটি মেয়ের ছবি মানেই কারো না কারো মনের খোরাক।

আপনি কী চান আপনার স্ত্রীকে কেউ কল্পনা করুক অন্যভাবে?

আপনি কী চান সে এমন কারো কাছে 'দৃষ্টি-ভোগের' শিকার হোক, যে তার নখের যোগ্যও নয়?

পর্দা মানেই ভালোবাসা ও দায়িত্ব

আপনি যদি সত্যিকার অর্থে আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসেন, তবে তাকে পর্দায় রাখবেন।

পর্দা মানেই বঞ্চিত করা নয়, বরং তাকে রক্ষা করা, সম্মানিত করা।

আপনি আপনার মোবাইলের স্ক্রিনে পাসওয়ার্ড দেন কেন?

কারণ এটি আপনার ব্যক্তিগত, মূল্যবান।

তেমনি, স্ত্রীও একটি রত্ন।

আপনার, শুধুমাত্র আপনার জন্য।

স্ত্রীকে পর্দায় রাখা মানে তাকে লুকিয়ে রাখা নয়, বরং তাকে রক্ষা করা

পর্দা করা নারী কখনো ছোট হয় না।

বরং সে হয় মর্যাদাসম্পন্ন, সুরক্ষিত, গর্বিত।

যখন আপনার স্ত্রী শালীন পোশাকে, পর্দায় ঘর থেকে বের হবে,

তখন বাহিরের পুরুষ জানবে—

এই নারী একজন সম্মানিত পুরুষের স্ত্রী,

একে কুদৃষ্টি দেওয়া মানে তার ইজ্জতের উপর আঘাত।

তখন মানুষ ভয় পাবে, সম্মান করবে।

পর্দা ইসলামি বিধানই নয়, এটা একান্ত স্বামীর অধিকার রক্ষার বর্ম

একজন স্বামী যখন স্ত্রীকে পর্দা করতে বলেন,

সে তাকে দমিয়ে রাখতে চায় না,

বরং সমাজের হিংস্র চোখ থেকে বাঁচাতে চায়।

কারণ সেই স্বামী জানে,

জাহান্নামে পুড়ার চেয়ে, সমাজের আগুনেও স্ত্রীকে পোড়তে দেওয়া যায় না।

---

ছোট করে কিছু কথা

স্ত্রীকে পর্দা করানো স্বামীর দায়িত্ব, আর স্ত্রীর পর্দা করা স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের চিহ্ন।

আপনি যদি স্ত্রীকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসেন,

তবে তাকে শুধু খাওয়া-পরা-শপিং নয়,

বরং তার আত্মা, ইজ্জত ও চরিত্রকেও রক্ষা করবেন।

আর সেটা হয় পর্দার মাধ্যমে।

আপনার স্ত্রী আপনার সম্মান,

পর্দা সেই সম্মান রক্ষার ঢাল।