গল্প: সময়ের ছুরি
আমি রাহাত, একটা সময় ছিল যখন আমি বুঝতেই পারিনি জীবনের আসল মানে কী। তখন ক্লাস টেনে পড়ি, স্কুলে পড়াশোনার চেয়ে মোবাইল, ফেসবুক আর মেয়েদের ইমোশনাল স্ট্যাটাস নিয়েই সময় কাটত। যখন দেখতাম কোনো মেয়ে হাসছে, মনে হতো হয়তো আমাকেই দেখে। একটু কথাও বললে মনে হতো — “বাহ! প্রেম হয়ে গেছে বুঝি!” এমন ভাবনার মধ্যেই দিন কেটে যেত।
একসময় ফারজানা নামের এক মেয়ের প্রেমে হাবুডুবু খেলাম। সে হয়তো একটু ভালো ব্যবহার করেছিল, আমি ভেবে নিলাম প্রেম করছে। কাগজে কাগজে কবিতা লিখে তার ব্যাগে রেখে আসতাম, অথচ সে তা বন্ধুদের দেখিয়ে মজা করত। ক্লাসে বসেই আমি তার নামের আদ্যক্ষর দিয়ে রুমাল, খাতা, এমনকি বেঞ্চে খোদাই করে দিতাম। আমার বন্ধুরা যখন টিউশনে যেত, আমি গুলিস্তানে তার পেছনে ঘুরে বেড়াতাম।
সেই সময়েই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে যায়—আমি এসএসসি তে ফেলের কাছাকাছি চলে যাই। বাড়িতে মুখ দেখানোর সাহস ছিল না, বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেল, আর আমি থেকে গেলাম শূন্য হাতে, একরাশ অনুশোচনায়।
একদিন রাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছিলাম—চোখে ক্লান্তি, কাঁধে হতাশা, আর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ। তখনি নিজের সঙ্গে এক চরম সিদ্ধান্ত নিই — "নারীর পেছনে নয়, ভবিষ্যতের পেছনে ছুটবো।"
আমি আবার পড়াশোনা শুরু করলাম। ফেসবুক, প্রেম, প্রেমের গান — সব কিছু বাদ দিয়ে কেবল বই আর বাস্তব জগতে ফিরে এলাম। রাত জেগে পড়তাম, দিনের বেলায় পার্টটাইম কাজ করতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। আমি যখন দ্বিতীয় বর্ষে, তখন ফারজানা হঠাৎ ইনবক্সে লিখল, “তুমি অনেক বদলে গেছো… কথা বলবে?”
হাসলাম। এবার উত্তর দিলাম না। কারণ আমি জানি, সময় বদলালে, মানুষও বদলে যায়।
চার বছর পর, আমি এক নামকরা টেক কোম্পানিতে চাকরি পাই। আমার মা চোখে পানি নিয়ে বলেছিলেন, “আমার ছেলে আসলেই মানুষ হয়েছে।” সেই অনুভূতির সাথে প্রেমের কোনো তুলনাই চলে না।
আজ আমি রাহাত, একসময় যাকে নিয়ে মেয়েরা হাসাহাসি করত, এখন তার বক্তৃতা শুনতে হলে হলরুমে টিকিট কাটতে হয়।
---
আমাদের ছোট শব্দ
তুমি যদি এখন নারীদের পেছনে দৌড়াও, একদিন সময় তোমার পেছনে দৌড়াবে — কিন্তু তুমি থেমে যাবে, কারণ তখন আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।
ভবিষ্যত তৈরি করো, সফলতা এমন এক নারী — যাকে পেলে সবাই তোমাকে সম্মান করবে।
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘গল্পের রাজ্য.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com
এমন মন ছুয়ে যাওয়া গল্প পরতে ভিজিট করুন ক্লিক