কম বয়সে বিয়ে — সময়ের দাবি না, বরং সমাজ রক্ষার জন্য জরুরি এক পদক্ষেপ
এই সমাজটা আমরা নিজেরাই নষ্ট করে ফেলছি, আবার নিজেরাই সেই নষ্ট সমাজ দেখে হতবাক হচ্ছি।
ধর্ষণ, রেপ, জিনা, পরকীয়া, অশ্লীলতা, রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা—এসব কী হঠাৎ করে জন্ম নিয়েছে?
না, এসব এসেছে আমাদের 'সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার’ জন্য।
আজকের প্রেক্ষাপট: ছেলেমেয়েরা যৌবনে প্রবেশ করে, কিন্তু বিয়েতে বাধা
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ অনেক মুসলিম প্রধান দেশে দেখা যায়—
ছেলে-মেয়ে ১৩-১৪ বছর বয়সেই যৌবনে পা দেয়।
এই বয়সে শরীর চায় ভালোবাসা, স্পর্শ, এবং একটা সঙ্গী।
কিন্তু সমাজের চাপ, ক্যারিয়ারের অজুহাত, চাকরির বাজারের ভয় দেখিয়ে
এই বয়সেই তাদের বলা হয়—
"এখন সময় না, আগে পড়াশোনা শেষ করো, তারপর বিয়ে!"
কিন্তু দেহ তো অপেক্ষা করে না।
চোখ দেখে সুন্দর মুখ,
ইন্টারনেট শেখায় অসংখ্য অশ্লীলতা,
ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে একা বসে রাত কাটে 'Virtual Relationship'-এ।
এরপরে যা ঘটে তা ভয়ংকর—
একজন বিয়ের বয়সী তরুণ-তরুণী চরম চাপের মধ্যে পড়ে—
কেউ ফেসবুকে প্রেমে পড়ে, কেউ হস্তমৈথুনে আসক্ত হয়,
কেউ প্রেমে ধোঁকা খায়,
কেউ ধর্ষণের পথ বেছে নেয়।
রাস্তা ঘাটে বখাটেপনা, যৌন হয়রানি—এসবের মূল কারণ কী?
রাস্তাঘাটে আপনি নিজেই দেখেছেন—
স্কুল ড্রেস পরা মেয়েদের তাকিয়ে থাকে বখাটে ছেলেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া মেয়ের পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরে কিছু ছেলে।
বাসে, মার্কেটে, চলতে ফিরতে নারীরা আজ নিরাপদ নয়।
কেন?
কারণ তারা প্রেম চায়? না।
কারণ, তারা চায় একটা বৈধ সম্পর্ক, যার নাম বিয়ে।
কিন্তু এই বৈধ পথটাকে কঠিন করে রেখেছে সমাজ।
ফলে তারা চলে যাচ্ছে অবৈধ পথে।
ধর্ষণ আর জিনার শিকড় কোথায়?
আসুন বাস্তবতা দেখি—
প্রতি বছর হাজার হাজার ধর্ষণ মামলা হয়,
ধর্ষণকৃতদের অধিকাংশ ১৮-২৫ বছরের যুবক,
আর ধর্ষিতারাও ১২-২০ বছরের কিশোরী।
যাদের যৌন চাহিদা আছে, কিন্তু বৈধ বিয়ের সুযোগ নেই—
তারা একসময় হিংস্র জানোয়ারে পরিণত হয়।
যেখানে সমাজ বিয়ে সহজ করে দিতে পারত,
সেখানে তারা কঠিন করে তোলে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের নামে,
দেনমোহরের নামে, চাকরি না থাকার অজুহাতে।
ইসলাম কী বলে?
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—
“হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য রয়েছে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। এটি দৃষ্টি সংযত রাখার এবং লজ্জাস্থানের হেফাজতের সর্বোত্তম মাধ্যম।”
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
ইসলাম তো ১৫-১৬ বছরেই বিয়েকে উৎসাহ দেয়,
কিন্তু সমাজ বলে—"তুমি ছোট"।
কিন্তু যখন সে ছোট ছেলে গোপনে প্রেম করে,
ভিডিও বানায়, কিংবা কোনো মেয়েকে ধ্বংস করে দেয়—
তখন সমাজ বলে, "কী ভয়ংকর যুগ আসছে!"
পরিণতির চিত্র
বিয়ের সুযোগ না পেয়ে—
কেউ পর্নে আসক্ত হয়,
কেউ দিনে-রাতে চ্যাটিং করে,
কেউ আত্মহত্যা করে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে,
কেউ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে সংসার ভাঙে।
বিয়েটা যদি হালাল পথে হতো,
তবে এসব হারাম ও ভয়ংকর ঘটনাগুলোর জন্মই হতো না।
সমাধান কী?
১. শরীয়াহ মোতাবেক বয়সে বিয়ে দিতে উৎসাহ দিন।
সন্তান যখন যৌবনে পা দেয়, তখনই তার জন্য বৈধ পথ খোলা রাখা দরকার।
2. মেয়ে বড় হয়েছে, চাকরি দরকার নয়, ভালো জীবনসঙ্গী দরকার।
তাই অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব তাকে ভালো পাত্রে বিয়ে দেওয়া, বয়স নয়—চারিত্রিক যোগ্যতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
3. ছেলের জন্য আয় রোজগার থাকলেই যথেষ্ট, চাকরি না হলেও চলবে, যদি পরিশ্রমী হয়।
চরিত্র ঠিক থাকলে বিয়েতে দেরি করলে তার নৈতিকতা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
4. বিয়েকে সহজ করুন, প্রেম, জিনা, ধর্ষণ কঠিন হয়ে যাবে।
---
বিয়ে সহজ করুন, প্রেমের নামে প্রতারণা বন্ধ হবে।
বিয়ে সহজ করুন, ধর্ষণের সংখ্যা কমবে।
বিয়ে সহজ করুন, হাজারো তরুণ-তরুণী হালাল ভালোবাসা পাবে।
একমাত্র ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে ও বাস্তব জীবনের প্রয়োজন বিবেচনায় কম বয়সে বিয়ে এখন সময়ের দাবি, সমাজ রক্ষার প্রয়োজন।
যারা আজ কম বয়সে বিয়েকে ‘ঝামেলা’ ভাবেন,
তারা আগামীর সমাজকে “ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন” — এটাও ভাবুন।
---
আপনার সন্তানের হালাল ভালোবাসা ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য, বিয়ে সহজ করুন — সময় থাকতে।