স্বামী:কে কষ্ট দেওয়া নারীর শিক্ষা | বাস্তব স্বামী স্ত্রীর অবহেলার-গল্প

 স্বামী স্ত্রীর শিক্ষা মূলক একটি গল্প

গল্প: স্বামীকে অবহেলার শিক্ষা

স্বামীকে অবহেলার শিক্ষা

প্রথম অধ্যায়: অবহেলার শুরু

দুই বছর হয়ে গেছে বিয়েটা হয়েছে।

রেহানা আর জামিল—নামে শুধু স্বামী-স্ত্রী, কিন্তু বাস্তবে যেন দুইটা ভিন্ন গ্রহের মানুষ।


জামিল একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারী।

তার স্বপ্ন ছিল, সংসারটা হবে ভালোবাসায় গড়া, যেখানে সন্ধ্যা হলেই স্ত্রী তার জন্য অপেক্ষা করবে, হেসে কথা বলবে, পাশে বসবে, এক কাপ চা আর একটু মায়া—এই চাওয়াটুকুই তো ছিল তার।


কিন্তু সেই চাওয়া যেন আগুনে ছাই হয়ে গেল।


বিয়ের পর থেকেই রেহানা তার প্রতি ছিল উদাসীন।

প্রথম মাসে জামিল ভেবেছিল, “সম্ভবত সময় লাগছে মানিয়ে নিতে।”

দ্বিতীয় মাসে ভেবেছিল, “হয়তো রেহানা লজ্জা পায়।”

দ্বিতীয় বছরে এসে সে বুঝেছিল—এই মেয়েটি ভালোবাসা বোঝে না, বোঝে শুধু অধিকার আর দাবি।


রেহানা কখনো জামিলের চোখে চোখ রেখে কথা বলেনি,

কখনো তার পাশে বসে স্নেহ করে মাথায় হাত রাখেনি।

রাতের বিছানাতেও ছিল শুধু শীতলতা, যেন দুজন না, বরং দুটো ছায়া একসাথে ঘুমোচ্ছে।


শারীরিক চাওয়া তো দূরের কথা, জামিল একবার ভালোবাসার কথা বলতে গেলেও, রেহানা মুখ ঘুরিয়ে বলতো,

“তুমি তো বেশি আবেগি। আমি এসব পছন্দ করি না।”

অপমান, অবহেলা, তাচ্ছিল্য—এই ছিল জামিলের প্রাপ্তি।

তবুও সে সংসার ভাঙেনি।

---

দ্বিতীয় অধ্যায়: সম্পর্কের ছিন্নসূত্র

একদিন হঠাৎ করেই রেহানা তার বাবার বাড়িতে চলে গেল।

কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই।

শুধু বলেছিল,

“আমি এই সংসারে থাকতে পারবো না। তুমি আমার মতো না। আমি আরও ভালো কিছু ডিজার্ভ করি।”

জামিল তাকে ফেরাতে চেষ্টা করেনি।

কোনো দিন রেহানা তাকে ভালোবেসে ডাকে নাই—তাহলে কেন টেনে রাখবে?

রেহানা বাবার বাড়ি ফিরে গিয়েও প্রথমে বেশ স্বস্তি পেয়েছিল।

মনে হয়েছিল, “এখন আমার স্বাধীনতা, আমার মতো থাকবো।”

কিন্তু দিন যত যেতে লাগলো, বাস্তবতার ছুরি ততই গভীরে ঢুকতে লাগলো।

তার বাবা বললেন,

“তুমি তো নিজের সংসার ঠিক রাখতে পারোনি, এখন আর এখানে আমাদের মাথা খেও-না।”

মা বলেন,

“কতদিন আর রাখবো তোকে? মানুষ কী বলছে জানিস? তোর স্বামী তো তোর পেছনে আসেওনি।”

ভাই-বোনেরা ঠাট্টা করে বলতো,

“জামিল ভাই তো গাধা ছিল, না হলে তোকে এতদিন সহ্য করতো না!”

পাড়া-পড়শিরাও আড়ালে বলে,

“মেয়েটা নিজের সংসার ভাঙলো! আজকাল মেয়েদের অহংকারই সর্বনাশ করে।”

রেহানা তখন প্রথম বুঝলো—স্বামী ছাড়া এই সমাজে তার কোনো জায়গা নেই।

যে জামিলকে সে অবহেলা করেছিল, সেই জামিলই ছিল তার সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে সহনশীল, সবচেয়ে সৎ সঙ্গী।

---

তৃতীয় অধ্যায়: অনুতাপের কান্না

দুই মাস পর এক সন্ধ্যায়, চুপচাপ জামিলের দরজায় এসে দাঁড়ায় রেহানা।

চোখ ফোলা, চুল এলোমেলো, মুখে অনুশোচনার ছাপ।

জামিল দরজা খুলে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

রেহানা হঠাৎ পা ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো—

“জামিল... আমি ভুল করেছি... তোমার মতো মানুষ আমি চিনতে পারিনি।

তোমার ভালোবাসা, সহ্যশক্তি, দায়িত্ববোধ—সবকিছু আমি অবহেলা করেছিলাম।

আমি ভেবেছিলাম তুমি সাধারণ, অথচ তুমি ছিলে আমার পৃথিবী।

আজ সবাই আমায় তুচ্ছ করে।

তোমার কাছে ফিরতে চাই... প্লিজ... আর একবার সুযোগ দাও।”

জামিল চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো।

তার চোখেও পানি।

সে বললো,

“রেহানা, তুমি যখন আমার স্ত্রী ছিলে, আমি চেয়েছিলাম তোমায় আঁকড়ে ধরি।

তুমি আমায় বারবার ছোট করেছো, অস্বীকার করেছো, অপমান করেছো।

আজ যখন তোমার কেউ নেই, তখন আমাকে মনে পড়ছে?

তুমি জানো কতোটা কষ্ট পেয়েছি আমি?”

রেহানা কাঁদতে কাঁদতে বললো,

“আমি বুঝেছি জামিল... তুমি ছাড়া কেউ নেই আমার।

তোমার ভালোবাসা, যত্ন, সহ্যশক্তি—সব এখন বুঝতে পারছি।

একটা নারী যদি তার স্বামীকে অবহেলা করে, একদিন সেই নারীকে সবাই অবহেলা করে।

আমার শিক্ষা হয়ে গেছে জামিল... ক্ষমা করো।”

জামিল তাকিয়ে থাকে স্তব্ধ হয়ে।

তার ভেতর থেকে কষ্ট ধীরে ধীরে গলে যেতে থাকে।

সে আস্তে করে রেহানাকে জড়িয়ে ধরে।

বললো,

“আমি ঘৃণা করি তোমার অতীতকে,

কিন্তু আমি ভালোবাসি সেই মানুষটিকে—যে এখন অনুশোচনায় ভেঙে পড়েছে।”

রেহানা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

জামিলের চোখেও তখন টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ে।

---

শেষ অধ্যায়: অবহেলার শিক্ষা

সময় বদলায়।

রেহানা এখন প্রতিদিন জামিলের পাশে বসে।

তার হাতে চা তুলে দেয়।

রাত হলে কাঁধে মাথা রেখে বলে,

“জামিল, আমি ভাগ্যবান—কারণ আমি তোমায় পাইছি।”

জামিল মুচকি হেসে বলে,

“তবে আর অবহেলা নয়, বুঝেছো?”

রেহানা চোখ মুছে বলে,

“না জামিল, এবার তুমি আমার অহংকার, আমার শ্রদ্ধা, আর আমার ভালোবাসা।”

---

শেষ লাইন:

"স্বামীকে অবহেলা করার শাস্তি শুধু স্বামী দেয় না—দেয় সমাজ, পরিবার, সময়, আর একসময় সেই নারী নিজেই নিজেকে দেয় সবচেয়ে বড় শাস্তি।"

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘গল্পের রাজ্য.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com

এমন মন ছুয়ে যাওয়া গল্প পরতে ভিজিট করুন ক্লিক

Previous Post Next Post